,

জি কে গউছের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার : ৪টি মামলায় ১৫৪দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দ, আইনজীবি, সাংবাদিক ও হবিগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ।
তিনি গতকাল বুধবার রাতে সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ এবং হাইকোর্ট, ঢাকা সিএমএম কোর্ট, সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল ও হবিগঞ্জ কোর্টে যে সকল আইনজীবি আইনী সহায়তা দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কারাগারে থাকা অবস্থায় জি কে গউছ সহ বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তি কামনায় হবিগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, বিভিন্ন মন্দিরে প্রার্থনা, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সভা-সমাবেশের সংবাদ হবিগঞ্জের সাংবাদিকগণ তাদের সংবাদপত্রে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করার জন্য তিনি সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
হবিগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে জি কে গউছ বলেন- আমার রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এবং আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের প্রতিটি দুঃসময়ে হবিগঞ্জবাসীকে আমি পাশে পেয়েছি পরম আপনজন হিসেবে।
৫৪ বছরের জীবনে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ১৫শ ১৭ দিন কারাভোগ করেছি। সর্বশেষ গত বছরের ২৯ আগষ্ট ঢাকায় ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় টানা ১৫৪দিন কারাভোগ করেছি। ২০১৫ সালে হবিগঞ্জ কারাগারে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, আমাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এছাড়াও আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করতে হয়েছে। কখনো সরকারী দল, কখনো বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে গিয়ে জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু একটিবারও হবিগঞ্জের মানুষ আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমার প্রতিটি দুঃসময়ে আমার পরম আপনজন হিসেবে হবিগঞ্জের প্রতিটি মানুষ আমার পাশে দাড়িয়েছেন। সকল ধর্ম-বর্ণ ও দল-মতের উর্ধ্বে উঠে বারবার হবিগঞ্জের মানুষ আমার পাশে থেকে আমাকে কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। এ জন্য আমৃত্যু আমি ও আমার পরিবার হবিগঞ্জবাসীর নিকট ঋনী হয়ে থাকবো।
জি কে গউছ বলেন- আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় আমার দলীয় নেতাকর্মীরা আমাকে মুক্ত করতে রাজপথে আন্দোলন করেছেন। প্রতিটি উপজেলায়, পৌরসভায়, ইউনিয়নে, ওয়ার্ডে আমার মুক্তির দাবীতে সভা-সমাবেশ করেছেন। আমি তাদের কাছে ঋণী হয়ে থাকব, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারা ফটকে হবিগঞ্জের হাজার হাজার মানুষ আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আসার পথে আমি হবিগঞ্জবাসীর ভালবাসায় সিক্ত হয়েছি। পথে পথে মানুষের ভালবাসার ফুল ছিটানো, আমাকে জড়িয়ে ধরে মানুষের কান্না আমি কোনো দিন ভুলব না। আমি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।
জি কে গউছ বলেন- আমি মসজিদমুখি মানুষ। মসজিদে জামায়াতে নামাজ পড়তে আমি স্বাছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু কারাগারে থাকার কারণে ২২টি জুম্মার নামাজ পড়তে পারিনি, জামায়াতে ওয়াক্তের নামাজ পড়তে পারিনি। আমার আপন খালা মৃত্যুবরণ করেছেন, আমার মামা মারা গেছেন। কিন্তু আমাকে তাদের জানাজায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। শহরের অসংখ্য মানুষের জানাজা থেকে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র বিনাভোটের নির্বাচনকে নির্বিঘ্নে করার জন্য আমাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা যায়, জোর করে ভোট করা যায়, গণতন্ত্র হরণ করা যায়, কিন্তু জোর করে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। ধুলিয়াখাল কারাগার থেকে ৬ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে হাজার হাজার মানুষ আমাকে বাসায় পৌছে দিয়েছে। এটাই মানুষের ভালোবাসা। শত ষড়যন্ত্র করেও আমাকে মানুষের কাছ থেকে আলাদা করা যাবে না। কারণ আমি নিজের জন্য নয় মানুষের জন্য রাজনীতি করি। যতদিন বেঁচে থাকবো, অতিতে যেভাবে মানুষের জন্য কাজ করেছি, ইনশাআল্লাহ বাকি জীবনও মানুষের জন্য কাজ করবো। এ জন্য আমার প্রতি হবিগঞ্জবাসীর দোয়া, আর্শিবাদ, সহযোগীতা ও ভালবাসা অতিতের মত অব্যাহত থাকবে, এটাই প্রত্যাশা করছি। আমি সকলের সু-স্বাস্থ, দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করছি।


     এই বিভাগের আরো খবর